১২শ শতাব্দীর শেষের দিকে লন্ডনের ফ্লিট স্ট্রীট এবং থেমস নদীর মাঝামাঝি অবস্থানে নাইট টেম্পলারদের হেডকোয়ার্টার হিসেবে টেম্পল চার্চ নির্মাণ করা হয়। ১১৯৯ থেকে ১২১৬ খ্রিস্টাব্দে কিং জনের শাসনামলে এই ভবনটিকে রাজকোষ হিসেবে ব্যবহার করা হত, যেখানে নাইট টেম্প্লাররাই ছিলেন ব্যাংকার বা আমানতকারী। তৎকালীন ব্রিটিশ আইনচর্চা অনুযায়ী এই টেম্পলটির মালিকানা ছিল ইনার টেম্পল এবং মিডল টেম্পলের ভিতর অংশীদারী ভিত্তিতে। বৃত্তাকার চার্চগুলোর মধ্যে এই চার্চটি সুপরিচিত। ১৩শ থেকে ১৪শ শতকে টেম্পলার চার্চগুলোর মধ্যে একটি কমন বৈশিষ্ঠ ছিল যেটা হল একটি পাথরের প্রতিকৃতি থাকত। চার্চটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানী কর্তৃক ভারী বোমাবর্ষণের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল যা অবশ্য যুদ্ধ শেষ হবার পরপরই সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করা হয়। যেখানে চার্চটি স্থাপিত সেই এলাকাটির নামই হয়ে গেছে "টেম্পল"। অনতিদূরে টেম্পল বার নামক একটি সুদৃশ্য গেট নির্মাণ করা হয়। টেম্পল পাতাল রেল স্টেশনটিও কাছেই।
১২শ শতাব্দীর মাঝামাঝি, চার্চটি নির্মাণের আগে লন্ডনের নাইট টেম্পলাররা একটি যায়গায় মিলিত হন যার নাম হাই হলবর্ণ। কিংবদন্তী আছে, রোমান শাসনামলে এই যায়গাতেই "লন্ডমিনিয়াম" নামের একটি মন্দির ছিল।[] নাইট টেম্পলারদের নজরে আসার কারণেই এই যায়গাটি একটি কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এবং পরবর্তীতে এখানে রাজকীয় কোন স্থাপত্য নির্মাণের উদ্দেশ্য নিয়ে এই যায়গাটিকে কিনে নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে টেম্পলাররা তাদের হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্য নিয়ে বানালেও পরবর্তীতে এখানে আবাসিক স্থান, সামরিক প্রশিক্ষনের যায়গা এবং সামরিক প্রশিক্ষণার্থীদের বিনোদনের জন্যেও ব্যবস্থা করা হয় যেহেতু টেম্পলারদের তাদের মাস্টারের অনুমতি ছাড়া শহরে বা প্রাঙণ ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার অনুমতি ছিল না।
দু'টো আলাদা অংশ নিয়ে চার্চটি গঠিত। প্রাথমিকভাবে তৈরী করা গোলাকার ভবনটিকে বলা হয় দা রাউন্ড চার্চ যা এখন চার্চের নেভ হিসেবে পরিচিত। পরবর্তীতে নির্মিত আয়তাকার অংশ যা পূর্বদিকে বর্ধিত হয়েছে, নির্মাণ করা হয়েছে ৫০ বছরেরও পরে, সেই অংশটুকুই এখন চ্যন্সেলের কাজ করছে।
১০৯৯ সালে ক্রুসেডাররা জেরুজালেম দখল করে নেওয়ার পরে, ডোম অফ রক অগাস্টিনিয়ানের দখলে চলে যায় যিনি এই কমপ্লেক্সটিকে একটি গীর্জায় রুপান্তরিত করেন, তখন আল-আকসা মসজিদটি রাজার প্রাসাদ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। ১২শ শতকের দিকে, আল আকসা মসজিদটি ডোম অফ রকের কাছাকাছি অবস্থিত হবার কারণে টেম্পলাররা আল আকসা মসজিদকেই তাদের হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে যেহেতু বিশ্বাস ছিল ডোম অব রকই হল "সলোমনের মন্দির"। টেম্পলাররা ডোম অফ রককে "টেম্পল ডোমোনি" বলে ডাকত যা গ্রান্ড মাস্টারদের চিন্হ হিসেবে সিলমোহরে থাকত। পরবর্তীতে এই স্থাপত্য মডেলটাই ইউরোপের সর্বত্র গোলাকার টেম্পলার চার্চের আদর্শ মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে থাকল।
রাউন্ড চার্চের ব্যসার্ধ ৫৫ ফুট যার মধ্যে দাড়িয়ে আছে সবচেয়ে প্রাচীন পুরবেক মার্বেলের একক কলাম। সম্ভবত দেয়াল এবং ছাদ প্রথমে রং করা হয়েছিল।
১১৮৫ সালের ফেব্রুয়ারীর ১০ তারিখে জেরুজালেমের আর্চবিশপ হেরাক্লিয়াস চার্চটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্রকরণ করেন। অনেকেই বলেন, রাজা দ্বিতীয় হেনরীও নাকি এই পবিত্রকরণ অনুস্থানে উপস্থিত ছিলেন।
ইংল্যান্ডে "নাইট টেম্পলার অর্ডার" খুবই শক্তিশালী একটি ক্ষমতা, টেম্পলের মাস্টারকে মন্ত্রীসভার প্রধান ব্যারণ হিসেবে মান্য করা হয়। এই কমপ্লেক্সটি নিয়মিতভাবেই রাজাদের বাসভবন, পোপ বা পোপের নিয়োজিত প্রতিনিধিদের থাকার যায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হত। প্রথমদিকে তো চার্চটিকে একটি সেফটি ডিপোজিট সুবিধাসম্পন্ন ব্যাংক হিসেবেও বিবেচনা করা হত। এমনকি অনেক বিশ্বস্ত ব্যক্তি অবাধ্যতাবশত মুকুট চুরি করে নিয়ে যেতে পারে ভেবে অনেক রাজপরিবারের ব্যক্তিবর্গ এখানেই তাদের মূল্যবান জিনিস নিরাপদে থাকবে বলে সম্পদ সংরক্ষণ করতেন। পরবর্তীতে অবশ্য এই ধর্মনিরপেক্ষ রাজত্ব সমগ্র ইউরোপের মধ্যে অন্য অনেকের ঈর্ষার কারণ হয়ে ওঠে এবং একসময় মুখ থুবড়ে পড়ে।
চার্চের নেভ এ উইলিয়াম মার্শালের কবর আছে, পাশেই আছে তার ছেলের কবর। ১২১৫ সালে রাজা জন এবং ব্যারনদের মধ্যে একটি আলোচনা হয়েছিল যেখানে উইলিয়াম মার্শাল মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা নিয়েছিলেন। ব্যারনরা চেয়েছিল রাজার বড় ভাই প্রথম রিচার্ড এর উত্তরাধীকারীদের হাতে চার্চটির দায়িত্ব এবং ক্ষমতা বুঝিয়ে দেওয়া হইক। মধ্যস্ততা সভায় মার্শাল রাজা জনের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন এবং পরবর্তী গ্রীস্মের আগেই একটা মীমাংসা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারই প্রচেষ্টায় পরবর্তী জুনে ঐতিহাসিক ম্যাগনা কার্টা স্বাক্ষরপ্রদান অনুষ্ঠান হয়েছিল।
পরবর্তীতে রাজা জনের শিশুপুত্র তৃতীয় হেনরি এর রাজত্বের সময় মার্শাল প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৩শ শতকে রাজা হেনরির ইচ্ছায় তাঁর নিজের কবরের স্থান সংকুলানের জন্যে চার্চের চ্যান্সেল সংস্কার করে সম্প্রসারিত করা হয়েছিল, সেদিন থেকে চার্চটি আজও একই অবস্থায় আছে। উত্তর-দক্ষিণে সমান দূরত্বে দু'টি আইল এবং মাঝখানে একটি বড় আইল বসিয়ে চার্চের চ্যান্সেল সম্প্রসারণ করা হয়েছিল। ভল্টের উচ্চতা ছিল ৩৬ ফুট ৩ ইন্চি। তারপরের ঘটনা এরূপ: হেনরির এক শিশুপুত্র মারা গেলে হেনরি তাকে চার্চে করব দেয়ার ব্যবস্থা করেন আর নিজের ইচ্ছা পরিবর্তন করেন। তার সর্বশেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার এ্যাবেতে সমাহিত করা হয়।
১৩০৭ সালে নাইট টেম্পলার প্রথা বিলুপ্ত হয়ে যাবার পর, রাজা দ্বিতীয় এডওয়ার্ড মুকুটের অধিকারী হিসেবে চার্চের নিয়ন্ত্রণ লাভ করেন। পরবর্তীকে এটি নাইট হস্পিটালারদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয় যারা দু'টি আইন কলেজকে এই চার্চের প্রাঙ্গণ ভাড়া দেন। একটি কলেজ নাইটদের ব্যবহৃত টেম্পলার অংশে চলে যায় এবং আরেকটি অংশ চার্চের ক্লার্গি হিসেবে ব্যবহৃত হত। চার্চের ভিতরভাগ এবং মধ্যভাগ দুটি কলেজে পরিবর্তিত হয়ে গেল, যে কলেজদুটি লন্ডনের চারটি আইন কলেজের মধ্য অন্যতম।
১৫৪০ সালে রাজা অষ্টম হেনরি কর্তৃক নাইট হস্পিটালার রহিতকরণের পর, ওদের যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণের সাথে সাথে চার্চটিও মুকুটের অধীনে চলে গেল। রাজা হেনরি চার্চের সাধককে "[ মাস্টার অভ দা টেম্পল]" উপাধি দিলেন। ১৫৮০ সালে চার্চটি পুলপিটের ধর্মযুদ্ধের ক্ষেত্রে পরিণত হয়। শেকসপিয়ার চার্চটির মর্যাদা সমন্ধে জানতেন এবং তিনি তাঁর "ষষ্ঠ হেনরি" নামক নাটকে চার্চটির প্রেক্ষাপটে যুদ্ধের চিত্রাঙ্কণ করেন। ২০০২ সালে, এই ঘটনার স্মৃতিরক্ষার্থে চার্চটির নতুন বাগানে লাল এবং সাদা গোলাপ গাছ লাগানো হয়।
১৬০৮ সালে রাজা প্রথম জেমসের তত্ত্বানধানে আইন কলেজদুটির সাথে এই চুক্তি হয় যে, কলেজ কর্তৃপক্ষ চার্চ প্রাঙ্গনের দেখাশোনা ও সংস্কার করবে বিনিময়ে তারা চার্চ প্রাঙ্গণ ব্যবহার করতে পারবে। তারা তারপর টেম্পল চার্চকে ওদের আনুষ্ঠানিক চ্যাপেল হিসেবে ব্যবহার করতে লাগল।
১৬৬৬ সালে লন্ডনে একটি বড় অগ্নিদূর্ঘটনা ঘটে এবং চার্চটি ক্ষয়ক্ষতি থেকে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। তারপর, ক্রিস্টোফার রেন কর্তৃক চার্চটির আমূল সংস্কার কাজ করা হয় যেমন বেদী নির্মাণ করা হয় এবং চার্চে একটি অর্গাণ (বাদ্যযন্ত্র) বসানো হয়। ১৮৪১ সালে স্মার্ক এবং বার্টন কর্তৃক চার্চটিকে ভিক্টোরিয়ান স্থাপত্যনীতিতে পুনঃসংস্কার করা হয় যার ফলে চার্চটির চেহারাই আমূল পাল্টে যায়। পরবর্তীতে ১৮৬২ সালে জেমস পিটার কর্তৃক আরেকবার চার্চটির সংস্কারসাধন হয়।
১৯৪১ সালের ১০ মে, জার্মান বাহিনী কর্তৃক বিমান হামলা হয়। তখন চার্চের ছাদে বোমাহামলা হওয়ার কারনে আগুন ধরে যায় এবং আগুন চার্চের নেভ এবং চ্যাপেলে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় চার্চের অর্গান, কাঠের কাজ, ভিক্টোরিয়ান স্থাপত্য স্টাইলে পুনঃগঠন সব পুড়ে যায়, দূর্লভ মার্বেলের কলামগুলোও অতিরিক্ত তাপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফেঁটে যায়। যদিও কলামগুলো চার্চের ভল্টকে সাপোর্ট দিচ্ছিল তবুও ওগুলোকে বাতিল এবং ব্যবহারের অযোগ্য বলে ঘোষণা দেওয়াই ছিল যুক্তিযুক্ত। তাই কলামগুলো পরিবর্তন করা হল এবং যতদূর সম্ভব আসলগুলোর মত করেই নির্মাণ করা হয়েছিল।
স্থপতি ওয়াল্টার গডফ্রে কর্তৃক পুনঃনির্মাণের সময় ১৭ শতকে রেন কর্তৃক সংস্কার সাধনের কিছু আসল জিনিসপত্র পাওয়া যায় যেগুলোকে ব্যবহার করেই চার্চটি পুনঃনির্মাণ করা হয়। অতঃপর কাজ শেষে ১৯৫৮ সালের নভেম্বরে চার্চটি আবার সবার জন্যে উন্মুক্ত করে খুলে দেওয়া হয়।
১৯৫০ সালের ৪ জানুয়ারি চার্চটিকে Grade I সংক্ষিত ভবন বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে
অন্যান্য ব্যবহারের কথা বাদ দিলে, চার্চটি মূলত টেম্পলারদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্যেই ব্যবহৃত হয়ে থাকত। ভোরবেলায় নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত টেম্পলারদেরকে চার্চের পশ্চিম দরজা দিয়ে প্রবেশ করানো হত। নতুনরা গোল নেইভে প্রবেশ করে আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করত। আসলে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে আর কি কি হত সেটা ইচ্ছাকৃতভাবে গোপনীয় রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে এটা নিয়ে অনেক গল্প-গুজব ছড়ায়। শত্রুপক্ষই মূলত এসব গুজবকে বিভিন্ন রঙ-চঙ চড়িয়ে ছড়িয়ে দেয় যে এখানে ধর্মবিরুদ্ধ কাজকর্ম চলে।
এখন এই চার্চে অন্যান্য সকল চার্চের মতন সাধারণ ধর্মীয় কার্যক্রমই যেমন "রবিবারের প্রার্থনা" চলে। মাঝে মধ্যে এখানে বিয়ের অনুষ্ঠানও হয় (সবার জন্যে প্রযোজ্য নয়)। চার্চের ভিতরের এবং মধ্যের অংশ প্রাইভেট চ্যাপেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
টেম্পল চার্চ ছিল পিকুলিয়ার চার্চের অন্তর্ভূক্ত। কারণ এখানকার অন্যরকম বিশেষ পোশাক যা শুধু সংস্লিষ্টরাই পড়তেন। রাজশাসনের সাথে চার্চটির সংস্লিষ্টতা আছে কিনা সেটা নিয়ে কানাঘুষা চলত। তার কারণ, লন্ডনের বিশপ নিজে এই চার্চের বিভিন্ন কর্মকান্ডের সময় আসতেন। জানা থাকা আবশ্যক যে লন্ডনের বিশপ রয়্যাল চ্যাপেলের একজন অফিসিয়াল ডিন।
চার্চে নিয়মিতই সম্মিলিত বাদ্য অনুশীলন এবং অর্গান বাজানো হত। ১৮৪২ সালে ড. হপকিন্স কর্তৃক ইংলিশ ট্রেডিশনের একদল গায়কদল নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল যারা যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিল।
১৯২৭ সালে, চার্চটির বাদকদল কর্তৃক "হিয়ার মাই প্রেয়ার" নামক সংগীত পরিবেশনের ফলে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করে। এটাই এখন পর্যন্ত কোন চার্চের বাদকদল দ্বারা গাওয়া সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বিংশ শতাব্দীর সর্বোচ্চ বিক্রি হওয়া রেকর্ডিং। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সিডি টির ৬০ লাখেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে।
ধর্মভীরু নয় এমন শিল্পীদের মনোযোগ আকর্ষনেও চার্চটি ব্যাপকভাবে সফল হয়। যেমন: ১৯৬২ সালে স্যার জন বার্বিরলি কর্তৃক পরিবেশনা - "ফ্যান্টাসিয়া অন এ থিম অফ থমাস টেইলস" এবং ১৯৮২ সালের এপ্রিলে পল টর্টেলিয়ার তার বিখ্যাত সেলো পরিবেশনা এখানে রেকর্ডিং করেন।
বিখ্যাত সায়েন্সফিকশন মুভি "ইন্ট্রাস্টেলার" এর আবহ সংগীত নির্মাণে একটি অর্গান পরিবেশনা দরকার ছিল, যেটিও এখানেই করা হয়। চার্চের অর্গানবাদক রজার সায়ের অর্গানটি বাজিয়েছিলেন এবং তার সংগে ব্যাকগ্রাউন্ডে ছিল চার্চের বাদকদল []। ইন্টারস্টেলার ছবির সুরকার জিমার বলেছিলেন- "টেম্পল চার্চে পা দেওয়া মানেই গভীর ইতিহাসের পাতায় নিমজ্জিত হওয়া। টেম্পল চার্চে পৃথিবীর সবচেয়ে মোহনীয় অর্গানগুলোর একটা অবস্থান করছে।"
টেম্পল চার্চের নিয়মিত কার্যাবলী ছাড়াও চার্চের বাদকদল প্রায়শই রেকর্ডিং অনুশীলন এবং সম্প্রচার করে থাকে। এই বাদকদলটি ১৮ জন ছেলের একটি দল যাদের অধিকাংশই সিটি অফ লন্ডন স্কুলের স্কলারশিপ পাওয়া, আরও আছে ১২ জন পেশাদার পুরুষ। এরা প্রতি রবিবার সকাল ১১:১৫ থেকে ১২:১৫ পর্যন্ত বাজায়। ২০০৩ সালে এরা "ভেইল অব টেম্পল" নামে একটি সাত ঘন্টাব্যাপী একটি ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। পরের বছরই এটিই আবার নিউ ইয়র্ক শহরে লিংকন ফেস্টিভ্যালে পারফর্ম করতে হয়।
সিগনাম ক্ল্যাসিক্যাল নামে ২০১০ সালে একটি রেকর্ডিং প্রকাশিত হয় যার মূলে ছিল এই বাদকদল এবং ইংরেজ অর্গানবাদক জেমস ভিভিয়ান। দুটোই ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল। ২০১৬ সালেও জন রাফেলের বেহালা কনসার্টে ১৮ জন বাদকদলের অংশগ্রহণ ছিল। সেই বছরই "আপার ভয়েস ক্রিসমাস মিউজিক" নামে একটা এ্যালবাম প্রকাশিত হয়।
চার্চে দুটো অর্গান রয়েছে। ২০০১ সালের চেম্বার অর্গানটি রবিন জেনিংস এর তৈরী। ১৯২৪ সালে নির্মিত প্রাইভেট বলরুম অর্গানটি হল একটি ফোর ম্যানুয়াল হ্যারিসন এ্যান্ড হ্যারিসন টাইপ অর্গান।
চার্চের সুখ্যাত অর্গানবাদক ছিলেন:
১৭০৪–১৭৩৭ (১৭২৯ থেকে কেবলমাত্র মিডল টেম্পলের জন্যে)
চার্চে সবসময়ই দুই ধরনের ক্লার্গি ছিল। একটা হল "মাস্টার অফ দ্য টেম্পল" আর অন্যটা হল "রিডার অফ দ্য টেম্পল"। মাস্টার অফ দ্য টেম্পলরা সবসময়ই টেম্পলারদের বেঁধে দেওয়া নিয়ম কানুন অনুসারে চার্চ পরিচালিত করত। বর্তমানে কর্মরত মাস্টার হলেন রেভারেন্ট রবিন গ্রিফিত জোনস যিনি ১৯৯৯ সাল থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত। মাস্টার নিয়মিতই মধ্যান্হ আহারের সময় সকলের জন্যে উন্মুক্ত বক্তব্য প্রদান করেন।
মাস্টার অফ দ্যা টেম্পলের আনুষ্ঠানিক পুরো পদবী হল: "রেভারেন্ট এ্যান্ড ভ্যালিয়ান্ট মাস্টার অফ দ্যা টেম্পল"।