ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ইমারজিং সাইন্স এন্ড ইনোভেশন (日本科学未来館 নিপ্পন কাগাকু মিরাই-কান), যা সাধারণভাবে মিরাইকান (未来館, আক্ষরিক অর্থে "ভবিষ্যতের জাদুঘর"), নামে পরিচিত হচ্ছে একটি জাদুঘর যার প্রতিষ্ঠাতা জাপানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এজেন্সি।
২০০১ সালে এটি চালু হয়। টোকিও শহরের ওডাইবা জেলায় এই উদ্দেশ্যে নির্মিত একটি নতুন ভবনে এটি অবস্থিত। ডাউনটাউন টোকিও থেকে ইউরিকামোমি নামক চালকবিহীন সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় যোগাযোগ ব্যবস্থার সাহায্যে ১৫ মিনিটে সেখানে যাওয়া যায়।
জাপান জুড়ে অবস্থিত অসংখ্য সিসমোমিটার থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বিশাল ভাণ্ডার থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকৃত-সময়ে (রিয়েল-টাইম) উপস্থাপন করা হয় যাতে বোঝা যায় দেশটি ধীরে ধীরে কম্পিত হচ্ছে। সময়ে সময়ে ভূমিকম্প যার জন্য জাপান বিখ্যাত, সেগুলো দেখানো হয় বড় নড়াচড়া হিসেবে। দর্শনার্থীরা অন-লাইন তথ্য ভাণ্ডারে অনুসন্ধান চালিয়ে সাম্প্রতিক ভূমিকম্প সম্পর্কে জানতে পারেন। ক্রিটেশিয়াস-প্যালিওজিন সীমার (কে-টি সীমার) সময় প্রাপ্ত একটি পাথর খণ্ড ঐ সময়কার পৃথিবীতে আছড়ে পরা একটি ধূমকেতুর অংশ যা ডাইনোসরদের চূড়ান্ত বিলুপ্তির কারণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। আসিমো, বিশেষ হোন্ডা রোবট এবং এর সাথে ম্যাগ্লেভ ট্রেনের একটি মডেল দর্শনার্থীদের প্রধান আকর্ষণ।
উন্নত জিও-কসমস উচ্চ রেজোলিউশন গ্লোবটি প্রায় প্রকৃত সময়ে (রিয়েল টাইম) বৈশ্বিক আবহাওয়া, মহাসাগরের তাপমাত্রা এবং বন-জঙ্গল সহ অন্যান্য ভৌগলিক, বৈজ্ঞানিক আর্থ-সামাজিক বিষয় উপস্থাপন করে। জিও-কসমস নামক গোলীয় পর্দাটি ১০,৩৬২ টি ওএলইডি প্যানেল নিয়ে গঠিত যাদের প্রত্যেকের আকার ৯৬ x৯৬ মিলিমিটার। এর প্রথম ও একমাত্র পুনরুৎপাদন হয়েছিল ২০১০ সালে টোহুকু ভূমিকম্পের ফলে জাদুঘরটি তিন মাস বন্ধ থাকে। ২০১১ সালের জুন মাসে এটিকে বর্তমান রূপ দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল মিরাইকানে আসেন এবং জিও-কসমস ডিসপ্লের সামনে জাপানী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। প্রদর্শনীটির স্বতন্ত্রতা দেখে তিনি বলেন: "আমি যতদূর জানি, আমাদের কাছে ঐ রকম অসাধারণ গ্লোবের একটিও নেই... "
জিও কসমস; জিও-পেলেট্টে এবং জিও-স্কোপ সহ টসুনাগারি স্থায়ী প্রদর্শনীর অংশ।
মিরাইকান একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের মানচিত্র অভিক্ষেপ(উপস্থাপন) পদ্ধতিকে নিজেদের দাপ্তরিক বিশ্ব মানচিত্র যন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করে। এর নাম অথাগ্রাফ। ১৯৯৯ সালে অথাগ্রাফের উন্নয়ন করেন জাপানী স্থাপত্যবিদ হ্যাজিমি নারুকাওয়া। "এই অভিক্ষেপ পদ্ধতি একটি এলাকার বিভিন্ন অনুপাত ঠিক রেখে একটি ত্রিমাত্রিক গোলোককে একটি দ্বিমাত্রিক চতুর্ভুজে পরিণত করে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে 'অথাগ্রাফ বিশ্ব মানচিত্র’ বিকৃতির পরিমাণে ভারসাম্য রেখে সফলতার সাথে গোলাকার বিশ্বের একটি ছবিকে সমতলে উপস্থাপন করে। "
প্রতি বছর তিনটি থেকে ছয়টি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়, যাতে বিজ্ঞান এবং কলা(আর্ট) পরপর আসে। তারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে- "টয়লেট- মানব বর্জ্য এবং পৃথিবীর ভবিষ্যৎ ", "টোকিও আকাশ বৃক্ষের নির্মাণযজ্ঞ " এবং "টার্মিনেটর প্রদর্শনী- যুদ্ধ নাকি সহাবস্থান? রোবট এবং আমাদের ভবিষ্যৎ"। ২০১২ সালের বিশেষ প্রদর্শনী "পৃথিবীর শেষ হয়ে যাওয়ার গল্প: ৭৩টি প্রশ্ন যার উত্তর আমাদের দিতেই হবে " এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল টোহুকু ভূমিকম্প এবং এর প্রভাব।
বহুভাষী কর্মকর্তাগণ জাপানের প্রথমসারির বিজ্ঞান উপস্থাপন করেন। মিরাইকানের নেতৃত্বে আছেন জাপানী মহাকাশবিদ ডঃ মামোরু মোহ্রি.