প্রাম্বানান মন্দির বা লোরো জংগ্রাঙ্গও (জাভানিজ: ꦫꦫꦗꦺꦴꦁꦒꦿꦁ, অনুবাদঃ লোরো জংগ্রাঙ্গও) ইন্দোনেশিয়ার বিশেষ অঞ্চল যোগজাকার্তার ৯ম শতাব্দীর হিন্দু মন্দির। এটি ত্রিমূর্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিব কে উৎসর্গ করে তৈরি। ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম মন্দির ।১৯৯১ সালে ইউনেস্কো প্রাম্বানান মন্দিরকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষনা করে। এটি তার লম্বা এবং তীক্ষ্ণ আর্কিটেকচারের দ্বারা চিহ্নিত। এটি হিন্দু স্থাপত্যের আদর্শ । পৃথক মন্দিরগুলির বৃহৎ কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে বিশাল ৪৭ মিটার উচ্চ (১৫৪ ফুট) কেন্দ্রীয় ভবন আছে । প্রাম্বানান মন্দির সারা বিশ্ব থেকে অনেক দর্শককে আকর্ষণ করে।
প্রাম্বানান মন্দির প্রাচীন জাভার বৃহত্তম হিন্দু মন্দির এবং প্রথম মন্দির ৯ শতকের মাঝামাঝি সম্পন্ন হয়। হিন্দু সঞ্জয় রাজবংশের রাকাই পিকাতান বৌদ্ধ শৈলেন্দ্র রাজবংশ এর বরোবুদুর এবং সেভু মন্দিরের উত্তর হিসাবে এই মন্দির নির্মাণ শুরু করেছিলেন। ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে রাজবংশ রাজবংশের প্রায় এক শতাব্দীর পর প্রাম্বানান মন্দির নির্মাণ হিন্দু সঞ্জয় রাজবংশের কেন্দ্রীয় জাভাতে ক্ষমতায় ফিরে আসার প্রতীক । এই বৃহদায়তন হিন্দু মন্দির নির্দেশ করে যে মেদাঙ্গ রাজ্য মহাযান বৌদ্ধধর্ম থেকে শৈব হিন্দুধর্মে তার পৃষ্ঠপোষকতা স্থানান্তরিত করেছিল।
মন্দিরটি কেন্দ্রীয় জাভা এবং যোগজাকার্তা প্রদেশের সীমান্তে যোগজাকার্তা শহরের প্রায় ১৭ কিলোমিটার (১১ মাইল) উত্তর-পূর্বে অবস্থিত।
প্রাম্বানন মন্দির গঠিত:
প্রাম্বানন মন্দির লোরো জংগ্রাঙ্গ কমপ্লেক্স নামেও পরিচিত। লোরো জংগ্রাঙ্গ (কিংবদন্তী) বেশ জনপ্রিয় । একসময় এই শিব মন্দির কমপ্লেক্সে ২৪০ টি মন্দির ছিল, বড় বড় বা ছোট ।বর্তমানে ৮ টি প্রধান মন্দির এবং অভ্যন্তরীণ অঞ্চলের ৮ টি ছোট মন্দির পুননির্মাণ করা হয়েছে। তবে ২২৪ টি পারভার মন্দিরগুলির মধ্যে কেবল ২ টিই সংস্কার করা হয়েছে। তাদের অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে; শুধুমাত্র কিছু বিক্ষিপ্ত অংশ রয়ে গিয়েছে। মন্দির কমপ্লেক্সটি তিনটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত। প্রথমটি বাইরের অঞ্চল। দ্বিতীয়টি মধ্যযুগীয় অঞ্চল যাতে শত শত ছোট মন্দির রয়েছে । তৃতীয়টি পবিত্রতম অভ্যন্তরীণ এলাকা যাতে আটটি প্রধান মন্দির এবং আটটি ছোট মন্দির রয়েছে।এছাড়া এখানে মা দুর্গার মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি পাওয়া গেছে।
১৯৬১ সাল থেকেপ্রাম্বানান মন্দির প্রাঙ্গণে প্রত্যেকদিন রামায়ণ ব্যালে হয়ে আসছে। এটি যেকোনো স্টেজ শোয়ের ক্ষেত্রে একটি বিশ্বরেকর্ড। ব্যালের কুশীলবদের বেশিরভাগ ইসলাম ধর্মানুসারী। মন্দিরে ‘নিয়েপি’ (Nyepi) বা ‘নিরবতার দিন’ পালন করা হয়।