হেউন্দে সৈকত (হাঙ্গুল: 해운대해수욕장; হাঞ্জা:海雲臺海水浴場; RR: Hae'undae haesuyokjang) দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান শহরের সমুদ্র সৈকত। প্রায়ই এই সৈকতকে কোরিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত ও সুন্দর সমুদ্র সৈকত বলে বিবেচনা করা হয়। বুসান নগরীর পূর্বে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকতটি হেউন্দে অঞ্চলে অবস্থিত। হেউন্দে স্টেশন থেকে লাইন ২ গামী পাতাল রেলে এখানে পৌঁছাতে প্রায় ৪০ মিনিটের মতো সময় লাগে। এছাড়াও গিমহে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এই সৈকত থেকে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত।
কোরীয় পর্যটক ছাড়াও চীন, জাপানসহ পশ্চিমা দেশের পর্যটকদের কাছে এই সৈকতটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে জুলাই ও আগস্ট মাসে এই সৈকত ও এর আশেপাশের এলাকায় বহু লোকের সমাবেশ ঘটে। বুসান নগরীর বেশিরভাগ বিদেশি জনগোষ্ঠীর বাসস্থান এই সৈকত সংলগ্ন হেউন্দে অঞ্চলেই। হেউন্দের কাছেই ছোট দ্বীপ্পুঞ্জ ওরিয়কদো অবস্থিত, যেটি বুসান নগরীর প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।
নতুন বছরের সূর্যোদয় দেখার জন্য এই সৈকতটি বিখ্যাত। এছাড়াও ১৯৮৮ সাল হতে "পোলার বেয়ার ক্লাব" নামের একটি দল চোসান বীচ হোটেলের সামনে নতুন বছর উপলক্ষ্যে প্রতি বছর "বরফ পানিতে সাঁতার" খেলার আয়োজন করে থাকে, যেখানে প্রায় ০°C তাপমাত্রার পানিতে প্রতিযোগিরা সাঁতার কাটে।
জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকায় হেউন্দেকে কোরিয়ার রাজধানী সিউলের বাইরে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এলাকা বলে চিহ্নিত করা হয়। এই সৈকতকে কেন্দ্র করে চোখে পড়ার মতো উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। এখানে আকাশচুম্বী আবাসিক দালান ও হোটেল রয়েছে। পর্যটকদের জন্য সৈকতের পাশেই ২৫০ প্রজাতির মাছের বিপুল সংগ্রহ নিয়ে গড়ে উঠেছে সী লাইফ বুসান একুয়ারিয়াম। বিনামূল্যে পার্কিংয়ের ব্যবস্থার পাশাপাশি রয়েছে বিনামূল্যে গোসলখানা, টয়লেট ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা। জুলাই ও আগস্ট মাসে অধিক পর্যটকের আগমনকে বিবেচনায় রেখে এই দুই মাসে এক বিশেষ গ্রীষ্মকালীন পুলিশ মোতায়েন করা হয়ে থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান নগরীর এই হেউন্দে সৈকতের দৈর্ঘ্য ও সৌন্দর্যের পাশাপাশি নগরীর কেন্দ্রস্থল থেকে নিকটে হওয়ায় অধিক জনপ্রিয়। বছর জুড়েই এখানে বিভিন্ন ধরনের উৎসব হয়ে থাকে। হেউন্দে অঞ্চল চলচ্চিত্রের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। প্রতি বছর বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এখানেই অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত টাইডাল ওয়েভ কোরিয় চলচ্চিত্রে এই সমুদ্র সৈকতের ধ্বংসাত্মক রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা উক্ত বছরের আন্তর্জাতিক বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষভাবে সাড়া জাগিয়েছিল।