ঈশ্বরের সিডার (আরবি: أرز الربّ আরজ আর-রব) হচ্ছে লেবাননের সিডার বনের অবশিষ্টাংশ যা একসময় লেবানন পর্বত জুড়ে বিস্তৃত ছিলো। এই বনের কাঠ আহরণ করেছে ফিনিশীয়, ইসরাইলী , মিশরীয়, আশারীয়, ব্যবলনীয়, পারস, রোমান এবং তুর্কি জনগোষ্ঠী।
পাহাড়ের লেবানন একবার ছিল ছায়াময় দ্বারা পুরু সিডার বন এবং গাছ প্রতীক, হয় দেশের. শতাব্দী পর ক্রমাগত বন উজাড়, ব্যাপ্তি এই অরণ্য হয়েছে লক্ষণীয়ভাবে কমে যাবে.
লেবানন পাহাড় একসময় ছিলো ঘন সিডারের বনে ছায়াঘেরা। সিডার গাছ দেশটির প্রতীক। শতাব্দী ব্যাপী ক্রমাগতভাবে বন উজাড় চলতে থাকলে এই অরণ্য বিলীন হয়ে যাবে।
বলা হয়ে থাকে একদা দক্ষিণ মেসোপটেমিয়ার কাছে সিডার ঘেরা সুন্দর এই ঐশ্বরিক অরণ্যে আধা ঈশ্বর এবং মানুষের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। একসময় এই বন সুমেরীয় ঈশ্বর এনিল কর্তৃক সুরক্ষিত ছিলো। ৪৭০০ বছর আগে মানুষ প্রবেশের পূর্বে গাছগাছালি তে পূর্ণ অরণ্য ছিলো দুর্ভেদ্য। বনের রক্ষাকর্তা অর্ধঈশ্বরদের হারিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নেয়। গল্পটিতে বলা হয়েছে গিলগামেশ সিডার কাঠ ব্যবহার করে তার নিজের শহর নির্মাণ করেন।
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ফিনিশিয়, মিশরীয়, আশারীয়, ব্যবিলনীয়, পারসি, রোমান, ইজরায়েলি এবং তুর্কীরা জংগল থেকে কাঠ আহরণ করতে থাকে। ফিনিশিয়গণ তাদের বাণিজ্যতরী নির্মাণে সিডার কাঠ ব্যবহার করতো। জাহাজের জন্য তাদের কাঠের প্রয়োজন ছিলো এবং সিডার কাঠ তাদেরকে প্রথম সামুদ্রিক ব্যবসায়ী জাতি হিসেবে পৃথিবীর কাছে পরিচিত । মিশরীয়গণ সিডার রজন ব্যবহার করত মমিকরণের কাজে। বাইবেল অনুসারে সলোমন জেরুজালেমে মন্দির নির্মাণ করতে সিডার কাঠ আহরণ করেন। সম্রাট হাড্রিয়ান এই বনকে রাজকীয় অঞ্চল হিসেবে দাবী করে এখান থেকে কাঠ আহরণ সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করেন।
১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো ঈশ্বরের সিডার এলাকাটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করে।
বনটি সুরক্ষিত। অনুমোদিত গাইড সাথে নিয়ে বন ভ্রমণ করা সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়ে ভূমি থেকে ডেট্রিটাস পরিষ্কার করা হয়। অসুস্থ গাছের পরিচর্যা করা হয় এবং মাটিতে সার দেওয়া হয়। ১৯৮৫ সালে 'সিডার গাছের বন্ধু কমিটি' বনায়ন শুরু করে। কয়েক দশক পরে এই উদ্যোগের ফলাফল পাওয়া যাবে কারণ সিডার গাছের বৃদ্ধি খুবই ধীর।
শীতকালে বরফের চাঁদরে ঢাকা সিডার বনে নান্দনিক সৌন্দর্য দেখা যায়।