কমল মন্দির ভারতের নয়া দিল্লিতে অবস্থিত বাহাই সম্প্রদায়ের পূজার স্থানগুলোর অন্যতম একটি স্থান। ১৯৮৬ সালে এটির নির্মাণ কাজের সমাপ্তি হয়। এই মন্দিরের কারুকার্য পদ্ম ফুলের ন্যায় হওয়ায় এটিকে ভারত উপমহাদেশের কেন্দ্রীয় মন্দির হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং মন্দিরটি দিল্লি শহরের একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। স্থাপত্যশৈলীতে কমল মন্দির অসংখ্য পুরষ্কার অর্জন করেছে এবং বিভিন্ন পত্রিকা ও সাময়িকীতে এই মন্দির এর উপর শতাধিক বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বাহাইদের অন্যান্য সকল মন্দিরের মত কমল মন্দিরও জাতি, ধর্ম,বর্ণ সলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এই মন্দিরে ২,৫০০ মানুষের সংকোলনের ব্যবস্থা রয়েছে। মন্দির ভবনটির উপরের অংশ মার্বেল পাথর খচিত সাতাশটি পদ্ম ফুলের পাপড়ি দিয়ে তৈরী হয়েছে। পাপড়িগুলো তিনটি স্তরে বিভক্ত এবং প্রতিটি স্তরে নয়টি করে পাপড়ি রয়েছে। মন্দিরের প্রধান কক্ষে ৪০ মিটারেরও বেশি উচ্চতা বিশিষ্ট নয়টি দরজা রয়েছে। ২০০১ সালে প্রচারিত সিএনএন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী কমল মন্দির পৃথিবীর সর্বাধিক পরিভ্রমিত মন্দির।
বাহাইদের অন্যান্য সকল মন্দিরের মত কমল মন্দিরও জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে যা বাহাই সম্প্রদায়ের গ্রন্থগুলোতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাহাই বিশ্বাসমতে, উপাসনালয় হল এমন একটি আধ্যাত্বিক স্থান যেখানে স্রষ্টার আরাধনার জন্য কোন সাম্প্রদায়িক বাধা নিষেধ ছাড়াই সকল ধর্মের মানুষের প্রবেশাধিকার রয়েছে।
বাহাই ধর্মমত শুধুমাত্র তাদের নিজস্ব ধর্মগ্রন্থকেই উৎসাহিত করে না, যেকোনো ভাষার যেকোনো ধর্মের যা উপাসনালয়ে পাঠ এবং/বা সঙ্গীতাকারে গাওয়া যায় সে সকল মতকেও উৎসাহিত করে। উপাসনালয়ে শিল্পীরা যখন পাঠ ও উপাসনা শুরু করেন, তখন উপাসনালয়ের ভিতরে সকল প্রকারের বাদ্যযন্ত্র বাজানো নিষেধ। অধিকন্তু, এই সময় কোন প্রকারের ধর্মীয় উপদেশমূলক ভাষণ প্রদান করা যাবে না এবং সেখানে কোন প্রকরের আচারগত অনুষ্ঠান উদযাপন করা যাবে না।
১৯৮৬ সালের ডিসেম্বরে উপাসনার জন্য কমল মন্দির সর্বসাধারণের জন্য খোলে দেওয়ার পর থেকে প্রায় সত্তর মিলিয়ন লোককে দিল্লির এই মন্দিরটি আকর্ষিত করেছে। এটি পৃথিবীর সর্বাধিক ভ্রমণকৃত ভবনগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি।
মন্দিরটি বৈশিষ্ট্য নির্মাণশৈলী এরূপ যে এটি প্রচুর পেশাগত স্থাপত্যশৈলী, চারুকলা, ধর্মীয়, সরকারী এবং অন্যান্য ভবন নির্মাণকে প্রভাবিত করেছে।