গয়গল (আজারবাইজানি: Göygöl, আক্ষরিক অর্থ "নীল হ্রদ") আজারবাইজানের একটি প্রাকৃতিকভাবে অবরুদ্ধ হ্রদ। এটি মুরোভদাগের পাদদেশে ও গাঞ্জা থেকে স্বল্প দূরত্বে অবস্থিত।
১১৩৯ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বরে ভূমিকম্পে কাপাজ পর্বতের কিছু অংশ ভেঙ্গে যায় এবং কুরক্কে নদীটির পথ বন্ধ করে দেয়। ফল সরূপ পর্বতের বিশুদ্ধ জলধারা হ্রদের রূপ গ্রহণ করে, সেজন্য হ্রদটির নামকরণ করা হয়েছে গয়গল; যা পানির বিশুদ্ধতা নির্দেশ করে। ২৫ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে হ্রদটির নিকটবর্তী শহর খানলার শহরের নাম পরিবর্তন করে গয়গল করা হয়। ১৮১৯ সালে জার্মান বাশিন্দাগণ হেলেনেনডর্ফ শহরের প্রতিষ্ঠা করে এবং ১৯৩৮ সালে এর নাম পরিবর্তন করে খানলার করা হয়। ১৯৪১ সালে, জার্মান বসতি স্থাপনকারীদের সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ দ্বারা কাজাখস্তানের কাছে স্থানান্তরিত হয় এবং তাদের স্থান আনাসতাস মিকোয়ান-এর আদেশে আর্মেনীয়গণ পূরণ করে। ১৯২৫ সালে এই হ্রদটি সদ্য প্রতিষ্ঠিত "গয় গল স্টেট রিজার্ভ"-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা ২০০৮ সালে গয়গল জাতীয় উদ্যান হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়।
বৃহত্তর গয়গল এলাকায় ১৯টি হ্রদ রয়েছে, যার ৮টি বৃহৎ হ্রদ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত, তার মধ্যে মারাল-গল, জেলিলগল, কারাগল উল্লেখ্য। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,৫৫৬ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এর সর্বমোট দৈর্ঘ্য ৬,৪৬০ মিটার। হ্রদটির গভীরতা ৯৩ মিটার। পানির বিশুদ্ধতা ও স্বচ্ছতার কারণে পানির নিচে ৮-১০ মিটার পর্যন্ত সবকিছু দেখা যায়। এই হ্রদের জীব বৈচিত্র্য খুবই সমৃদ্ধ। প্রাকৃতিকভাবে এই হ্রদ সৃষ্টর পর এখান থেকে ট্রোউট নদীর উদ্ভব হয়। গয়গল এলাকা শুষ্ক শীতকাল এবং হালকা গরম গ্রীষ্মকালের জন্য সুপরিচিত। ৬০০ হতে ৯০০ মিমির মধ্যে এখানে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। গয়গলের নিকট আজারবাইজানি সেনাবাহিনীর একটি ছাউনি আছে। বসন্ত এবং গ্রীষ্ম ঋতুতে হ্রদটি একটি প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। ২০০৯ সালে, ৪৫০০রও বেশি পর্যটক গয়গল দর্শনে আসেন, যার অধিকাংশই জার্মান নাগরি। গয়গলের আশেপাশে বেশিরভাগ জনগণ জার্মান জাতিগোষ্ঠীর, ১৮৫৪ সালে নির্মিত পুরাতন জার্মান লুথেরান গির্জা সহ অনেক জার্মান সংস্কৃতির স্মারকস্তম্ভ অবস্থিত।
এর সৌন্দর্যের কারণে, অনেক উপন্যাস, কবিতা এবং সঙ্গীত ব্যান্ডগুলির জন্য হ্রদটি একটি অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।